খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও সরকারের দায়….

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও সরকারের দায়….
“””””””””””””””””””””””””'””***””””””””””””””””””””‘””””””'”
বয়সের ভাড়ে নূয্য হলেও ১৮ সাল পর্যন্ত দলের প্রধান হিসেবে সাংগঠনিক কাজ ঠিকই চালিয়ে আসছিলেন আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।উনার কিছু শারীরিক অসুস্থতা আছে,যেগুলোর নিয়মিত চেক -আপ ও ট্রিটমেন্ট দেশের বাহিরে ই হতো,যেমনটা হাসিনা ওয়াজেদও বিরোধী দলে থাকার সময় করিয়েছেন,সরকার প্রধান হওয়ার পরেতো বটেই…
তাছাড়া! যে দেশে সাধারণ অনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরাও দেশের বাহিরে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করান, সেখানে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশের বাহিরে গিয়ে চিকিৎসার অধিকার পাবে না,সেটা ভাবতেই মনে হয় “ডাল ম্যা কুচ কালা হ্যায়”…
জেলে যাওয়ার কিছু দিন আগেও যিনি কক্সবাজার, সিলেট সহ সারাদেশে চষে বেড়িয়েছেন,মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছন, তার নেতৃত্বের সম্মোহনী শক্তিতে তখন লক্ষ কোটি জনতা তাকে স্বতঃস্ফূর্ত অভিবাদন জানায়েছিলো রাস্তার দু পাশে দাড়িয়ে।
তার প্রতি সাধারণ জনগণের যে অকৃত্রিম ভালোবাসা, সেটাই কি কাল হয়ে দাড়িয়েছে…!?
কি এমন হলো! যে,জেল থেকে বের হওয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্য শুধু অবনতির দিকেই যাচ্ছে…!?
তবে,রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ খালেদা জিয়াকে “স্লো পয়োজনিং” প্রয়োগের সন্দেহ পোষণ করছেন।
কেননা,নিকট অতীতে তাকালেই দেখা যায় যে,
ক্ষমতা লোভী স্বৈরশাসক রা নিজেদের অবৈধ ক্ষেমতাকে চিরস্থায়ী করতে বিরোধী দলের নেতাদের স্লো পয়োজনিং এর মাধ্যমে হত্যা করেছেন,বা চেষ্টা করছে…
সম্প্রতি এভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার ও আলোচিত নাম রাশিয়ার বিরোধী দলের নেতা ‘আলেক্সেই নাভালনি’ তাকে দমন করার করার জন্য’ই পুরোনো একটা অর্থ কেলেঙ্কারির মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার করে,দীর্ঘ দিন জেলে থেকে ৪৪বছর বয়সী অ্যলেক্সেই অসুস্থ হয়ে গেলে,তাকে জার্মানিতে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়, ওখানেই বিষয়টি ধরা পরে যে,তাকে ‘নার্ভ এজেন্ট নেভিচক’ প্রয়োগ করা হয়েছিল।
এটা নিয়ে পুতিনকে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।জার্মানির চ্যান্সেলর মার্কেল ও ইউ এস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এর তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করেন।
গত কয়েক বছর আগে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সৎ ভাই কিম জং ন্যাম’কে হত্যার কথা আমরা জানি।মালেয়শিয়াতে নির্বাসিত ছিলো ন্যাম।এর জন্য মালেয়শিয়া সরকার ভিয়েতনামে এর পাসপোর্ট ধারী একজন মহিলাকে আটক করেছে,মালেয়শিয়া সরকার নিশ্চিত করেছে যে তাকে স্লো পয়োজনিং এর মাধ্যমে হত্যা করা হয়।এটা স্পষ্ট যে সৎ ভাইকে হত্যার মাধ্যমে উন নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিলেন।
ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যু হয় ২০০৪ সালে।তার মারা যাওয়ার দু বছর আগে থেকেই তাকে পশ্চিম তীরের রামাল্লায় গৃহবন্দী করে রেখেছিলো ইসরায়েল সরকার ।
অসুস্থতার পরে তাকে ফ্রান্সের সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়,পরীক্ষার পর তার দেহে বিষাক্ত পোলনিয়াম
পাওয়া যায়।
বিখ্যাত লেখক বার্গম্যানের লিখা ‘রাইজ এন্ড কিল ফার্স্ট” বইয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেন,ইসরায়েল সরকার কিভাবে স্লো পয়োজনিং… প্রয়োগের মাধ্যমে তাকে হত্যা করেন। ইয়াসির আরাফাতে মৃত্যুর কয়েক বছর পরে তার স্ত্রী ও কন্যা পেরিসের আদালতে মামলাও দায়ের করেন,পরবর্তীকালে ইসরায়েল একজন প্রেসিডেন্ট স্বীকারও করেন যে,ইয়াসির আরাফাতের মতো উদার পন্থী নেতাকে এভাবে হত্যা করা উচিৎ হয়নি।
উপরোক্ত তিনটা ঘটনা ই রুগীকে দেশের বাহিরে নেওয়া পরই প্রমাণিত হয়েছে প্রকৃত ঘটনা আসলে কি ঘটেছিলো! দেশের ভিতরে হত্যা করা হলে তো ষড়যন্ত্র প্রমাণ করার সুযোগ একেবারেই নেই।
অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে ক্ষমতালোভী শাসকরা এরকম ন্যাক্কারজনক কাজ করে থাকেন। এরকম আরো অসংখ্য সুপরিকল্পিত গুপ্ত হত্যার নজীর
পাওয়া যায়।তবে!খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সরকার প্রধান হাসিনা ওয়াজেদ এরকমটা করবেন,আমরা বিশ্বাস করতে চাই না….
কিন্তু,খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া নিয়ে যে গড়িমসি করছে সরকার,তাতে মানুষ এখন ভাবতে বাধ্য হচ্ছে যে,খালেদা জিয়াকে সু পরিকল্পিত ভাবে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র কে আড়াল করতেই কি বিদেশে যেতে বাধা দিচ্ছেন.! নাকি উনার মৃত্যুর কনফার্ম করেই বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হবে…!!
অবৈধ ক্ষেমতা,বন্দুকের নল,কিংবা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে অনেকের মুখ হয়তো আপাত বন্ধ করে রাখা যাবে। কিন্ত!একজন খালেদা জিয়া একদিনেই জননেত্রী হয়ে উঠে নাই,লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে কেনা স্বাধীন দেশটাতে গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠার ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মানে তার অবদান অসামান্য।এরকম একজন মানুষের চিকিৎসার অধিকার টুকু হরন করে রেখেছেন, একদিন এর হিসেব দিতে হবে জাতির কাছে…
সুতরাং….
খালেদা জিয়াকে নিয়ে যদি কোন দুরভিসন্ধিমূলক পায়তারা না থাকে,তাহলে অতিসত্বর তাকে যেন তার নিজের চিকিৎসা নেওয়ার অধিকার টুকু ফিরিয়ে দেওয়া হয়! না হলে জাতি ধরে নিতে বাধ্য হবে যে, খালেদা জিয়া ইয়াসির আরাফাত, আলেক্সেই, কিংবা কিম জং ন্যামে’র ন্যায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যার দিকে
ঠেলে দেওয়া হচ্ছে

About the Author

Leave a Reply